NCTB Class 7 Science Bengali Version Chapter 13 প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ Solution
Bangladesh Board Class 7 Science Solution Chapter 13 প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ Solution Exercises Question and Answer by Experienced Teacher.এখানে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞান বইয়ের ত্রয়োদশ অধ্যায় প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ অনুশীলনের সমস্ত সমাধান দেওয়া হয়েছে।
NCTB Solution Class 7 Chapter 13 প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ :
Board | NCTB Bangladesh Board |
Class | 7 |
Subject | Science |
Chapter | Thirteen |
Chapter Name | প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ |
প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ অনুশীলনী প্রশ্ন এবং উত্তর :
শূন্যস্থান পূরণ কর :
(১) চাষের জমি বাড়াতে ও বাসস্থান তৈরি করতে মানুষ ___ কেটে ফেলছে।
(২) শিল্পকারখানার ___ পানি দূষণের জন্য দায়ী।
(৩) বিভিন্ন আবর্জনাকে পচতে সাহায্য করে ___।
উত্তর :
(১) চাষের জমি বাড়াতে ও বাসস্থান তৈরি করতে মানুষ বনজঙ্গল কেটে ফেলছে।
(২) শিল্পকারখানার বর্জ্যপদার্থ ও বিষাক্ত জল পানি দূষণের জন্য দায়ী।
(৩) বিভিন্ন আবর্জনাকে পচতে সাহায্য করে ব্যাকটেরিয়া ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
(১) দূষণ কীভাবে ঘটে তার একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : আমাদের পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশে মুখ্য কিছু উপাদান রয়েছে যেমন জল, বায়ু, মাটি, ইত্যাদি এই উপাদানগুলি জীবজগতের জন্য বিশেষ ভাবে জরুরি। জীবজগতের সকল প্রজাতির জীবনধারণের জন্য প্রকৃতির এই উপাদান গুলি অতি আবশ্যক কিন্তু অনেক সময় মানুষ্য সৃষ্ট কারণে বা প্রাকৃতিক কারণে এই উপাদানগুলিতে অন্নান্য বিভিন্ন পদার্থের মিশ্রণ ঘটে ফলে এই জীবনদায়ক উপাদানগুলিই জীবের ক্ষতি সাধন করে এবং ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পরে। এই ঘটনাকেই দূষণ বলা হয়। সহজ করে বললে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান যেমন জল. বায়ু, মৃত্তিকা ইত্যাদি উপাদানে প্রাকৃতিক কারণে বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে বিভিন্ন দূষক পদার্থ মিশ্রিত হয়ে তা ব্যবহারের অযোগ্য হলে তাকে দূষণ বলে। যেমন – বিষাক্ত গ্যাস ও ধোয়ার কারণে বায়ু দূষণ, কীটনাশক ও রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রনের ফলে মৃত্তিকা দূষণ, কলকারখানার আবর্জনা জলে মিশে জল দূষণ।
(২) দূষণ রোধ সম্পর্কে তোমার এলাকার সবাইকে সচেতন করতে হলে তুমি কী কী করতে পার?
উত্তর : দূষণ শুধু একটি নির্দিষ্ট জীবের জন্য ক্ষতিকারক নয় দূষণ সমগ্র জীবজগতের জন্য ক্ষতিকারক। দূষণের জন্য প্রাকৃতিক উপাদানের ভারসাম্য নষ্ট হয়। বর্তমান পৃথিবীতে দূষণের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে এর ফলে আমাদের সমগ্র পৃথিবী তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার প্রমান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সমগ্র পৃথিবীতে যেমন বৃষ্টি প্রবন অঞ্চলে দেখা দিয়েছে খরা আবার মরুভূমি এলাকায় দেখা যাচ্ছে প্রবল বৃষ্টি। তাই আমাদের সকলের একত্রিত হয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দূষণকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালাতে হবে। আমরা বিভিন্ন কার্যক্রোমের মাধ্যমে আমাদের এলাকার মানুষকে দূষণ সম্পর্কে সচেতন করতে পারি। নিম্নে আলোচনা করা হলো –
(১) নিজের নিজের এলাকার মানুষকে বোঝাতে হবে দূষণের ভয়ানক পরিণতি। দূষণের ফলে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন রোগ ও পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কথা।
(২) এলাকার মানুষকে সচেতন করতে হবে কি কি কারণে দূষণ সংগঠিত হয়।
(৩) দূষণকে আটকানোর জন্য মানুষ কি কি করতে পারে সেই সম্পকে স্পষ্টতা ও জ্ঞান অর্জন করাতে হবে এলাকার মানুষের মধ্যে।
(৪) আমাদের দৈনিন্দন বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির দূষণ ঘটিয়ে থাকি সে সম্পর্কে সচেতন করতে হবে এলাকার মানুষজনকে।
(৫) সরকারি বা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা দিয়ে দূষণ প্রতিরোধের প্রহার চালাতে হবে।
(৬) বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বৃক্ষরোপন, নালা পরিষ্কার, আবর্জনা পরিষ্কার ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করতে হবে।
(৭) স্থানীয় স্কুল ও কলেজের ছাত্রদের দিয়ে পরিবেশ দূষণ ক্ষতিকর প্রভাবের উপর তৈরী বিভিন্ন অনুষ্ঠান করিয়ে এলাকার মানুষকে সচেতন করা যায়।
উপরোক্ত এই মাধ্যম গুলোর মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের এলাকার মানুষকে দূষণ সম্পর্কে সচেতন করতে পারি।
(৩) তোমার বাড়ির পরিবেশ সংরক্ষণে তোমার করণীয় কী?
উত্তর : আমাদের নিজেদের বাড়ির পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। পরিবেশের সকল উপাদানকে রক্ষা ও সংরক্ষণ করা আমাদের সকলের কর্তব্যের মধ্যে পরে। আমরা আমাদের বাড়ির দৈনিন্দন কাজের মধ্যে দিয়েও পরিবেশকে সংরক্ষণ করতে পারি। নিম্নে এই বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের বাড়ির বিভিন্ন করণীয় :
আমরা আমাদের বাড়ির চারপাশে আমার বৃক্ষরোপন করতে পারি। বাড়ির পাশের নালা ও নর্দমাকে পরিষ্কার করতে পারি। আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি আছে যা প্রচুর পরিমানে বিদ্যুৎ খরচ করে আর বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য প্রকৃতির ব্যাপক হারে দূষণ হয় ফলে আমাদের প্রত্যেকের বিদ্যুৎসাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। এবং প্রয়োজন না থাকলে এই বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম গুলোকে বন্ধ করে রাখতে হবে যাতে বিদ্যুৎ অপচয় না হয়। বাড়িতে ব্যাবহৃত জলের অপচয় হচ্ছে কি না তার দিকে লক্ষ রাখতে হবে যাতে পৃথিবীর সীমিত পরিমান পানীয় জলের অপচয় না হয়। বাড়ির সকল জলের নলকে দেখে রাখতে হবে যাতে সেখানে কোনো লিকেজ না থাকে। আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে ব্যাবহৃত প্রথাগত বিদ্যুতের বদলে পুনর্বাবহারযোগ্য শক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে হবে যেমন – সৌর বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, ইত্যাদি। রানার সময় কয়লা, গ্যাস, বা খড়ির ব্যবহার বন্ধ করে সৌর কুকার, হিটার, ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। অকারণে জলের অপচয় বন্ধ করতে হবে। বাড়ির দৈনিন্দন কাজে ব্যাবহৃত বিভিন্ন বর্জ পদার্থকে সঠিক ভাবে সঠিক স্থানে ফেলতে হবে। প্লাস্টিকের ব্যবহার করতে হবে অথবা ব্যবহার করলেও তা সরাসরি প্রকৃতির বিভিন্ন জায়গায় ফেলা যাবে না। সঠিক ভাবে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। যাতে প্লাস্টিক নালা নর্দমা দ্বারা বাহিত হয়ে নদী ও সমুদ্রে মিশতে না পারে।
(৪) তোমার বিদ্যালয়ে পরিবেম সংরক্ষণে তুমি কীভাবে ভূমিকা রাখতে পার?
উত্তর : আমাদের বিদ্যালয়ের পরিবেশ সংরক্ষণে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারি। বিদ্যালয়ে ছোট ছাত্র-ছাত্রীরা থাকে তাই বিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষা ও দূষণ মুক্ত রাখা অতি আবশ্যক।
বিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন পদক্ষেপ :
(১) বিদ্যালয়ের চারপাশের প্রচুর পরিমানে বৃক্ষরোপন করে।
(২) বিদ্যালয়ের নিত্যদিনের আবর্জনাকে আলাদা আলাদা করে পৃথক করে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে রাখার ব্যবস্থা করা।
(৩) বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশ সংরক্ষনের বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা তৈরী হয়।
(৪) নিয়মিত বিদ্যালয়ের চারপাশ, শ্রেণীকক্ষ ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে।
(৫) বিদ্যালয়ের বাথরুমকে নিয়মিত ভাবে পরিস্কার করতে হবে এবং ছাত্রছাত্রীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
এই সকল পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি।
(৫) পানি দুষণের দুটো প্রভাব উল্লেখ কর।
উত্তর : মানুষের নির্মিত কলকারখান থেকে নির্গত বিভিন্ন বিষাক্ত ও দূষিত বর্জপদার্থ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জলাশয়ের সাথে মিশ্রিত হচ্ছে, বর্তমানে কৃষিকাজে ব্যাবহৃত বিভিন্ন কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় এবং এই সার বৃষ্টির জলের মধ্যে দিয়ে নদী ও ভূগর্ভের নিচের জলস্তরে মিশ্রিত হয় এই ভাবে আমাদের প্রকৃতির বিভিন্ন জলের উৎস দূষণের কবলে পড়ছে। জলদূষণ আমাদের বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিসাধন করে। নিম্নে জলদূষণের প্রভাব গুলি আলোচনা করা হলো –
জলদূষণের বিভিন্ন প্রভাব :
(১) দূষিত জল আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। যেমন – কলেরা, টাইফয়েড, আমাশা, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
(২) জলদূষণের ফলে জলের মধ্যে বসবাসকারী জীব ও উদ্ভিদের স্বাভাবিক জীবনচক্র বাধা প্রাপ্ত হয়। দূষণের মাত্রা অতিরিক্ত হলে জলজ প্রাণীগুলি মারা যায়।
(৩) জল দূষণের ফলে কৃত্তিম জলসঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরী হয়। কারণ দূষিত জল পানের অযোগ্য তাই জল থেকেও জল পাওয়া যায় না।
(৪) জল দূষণের ফলে প্রকৃতির বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। কেননা পৃথিবীর জীবজগতের বাস্তুতন্ত্রে সকল প্রকার প্রাণী ও উদ্ভিদ একে অপরের উপর নির্ভরশীল।
(৫) জল দূষণের ফলে বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মানুষের মধ্যে জলবাহিত রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
(৬) জল দূষণের ফলে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
উপরিউক্ত প্রভাবগুলি ছাড়াও জল দূষণের আরো বিভিন্ন প্রভাব রয়েছে। মানুষ আধুনিক ও উন্নত সমাজ গড়ে তোলার তাগিদে প্রকৃতির জীবনদায়ক জলকে জীবননাশক জলে পরিণত করেছে।
(৬) বায়ু দূষণ কেন মানুষের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তর : বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে ও নিজেদেরকে আরো উন্নত করতে গিয়ে প্রকৃতির সকল উপাদানকে করে তুলেছে দূষিত। এই দূষণগুলির মধ্যে একটি হলো বায়ুদূষণ। মানুষের নির্মিত কলকারখানার চিমনি, বিভিন্ন যানবাহন থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোয়া ইত্যাদি কারণে আমাদের পরিবেশের বায়ু ক্রমশ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে একেই এক কথায় বায়ুদূষণ বলে। বায়ুতে বিভিন্ন গ্যাসের পরিমান বৃদ্ধি পেলে যেমন – কার্বনডাই-অক্সাইড, সালফার, আমোনিয়া ইত্যাদি গ্যাস মিশে বায়ুকে দূষিত করে তোলে। এই দূষিত বায়ু আমাদের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। নিম্নে বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
বায়ুদূষণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর :
(১) মানুষ সহ বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ শ্বাসকার্য চালায় প্রকৃতির বায়ুর মাধমে। তাই যখন এই বায়ু দূষিত হয়ে যায় সেই দূষিত বায়ুতে উপস্থিত বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে নানান রোগের সৃষ্টি করে আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
(২) বায়ুতে অবস্থিত বিভিন্ন দূষিত উপাদানের জন্য আমাদের শ্বাসকষ্ট হয়। এই ক্ষতিকারক উপাদানবগুলি আমাদের ফুসফুসের ভাবে ক্ষতি করে।
(৩) বায়ু দূষণের ফলে আমাদের বায়ুমণ্ডলে কার্বনডাই -অক্সাইড গ্যাসের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে আমাদের পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
(৪) রেফ্রিজারেটর, শীততাপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, ইত্যাদি থেকে CFC গ্যাস নির্গত হয় এই গ্যাস আমাদের পৃথিবীর ওজন স্তর ক্ষয় হচ্ছে। এর ফলে সূর্যের অতিবেগুনিরশ্মি গুলি সরাসরি পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারছে। এই কারণে আমাদের ত্বকে ক্যান্সার রোগের সৃষ্টি হয়।
(৫) বায়ু দূষণের ফলে বায়ুতে ভাসমান জলীয়বাষ্পের সাথে বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস মিশ্রিত হয় এবং এর ফলে অম্ল বৃষ্টি সৃষ্টি হয়। এই অম্লবৃষ্টি উদ্ভিদ ও প্রাণীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
বায়ুদূষণের থেকে মানুষ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের দৈনিক জীবনে সব ক্ষেত্রেই এখন বায়ু দূষণের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। মানুষের কৃত কর্মের জন্য পৃথিবীর বায়ু দূষিত হয়েছে কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে সমগ্র পৃথিবীর উপর।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :
(১) কোনটি থেকে শহরের বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহ করা হয়?
(ক) নলকূপ
(খ) পুকুর
(গ) নদী
(ঘ) বিল
উত্তর :
(ক) নলকূপ
(২) মাটি দূষণের কারণ হলো-
(i) পলিথিন ও কীটনাশক
(ii) আবর্জনা ও মৃতজীবদেহ
(iii) রাসায়নিক সার ও কাঁচ
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii
(খ) i ও iii
(গ) ii ও iii
(ঘ) i, ii ও iii
উত্তর :
(খ) i ও iii
দৃশ্যটি লক্ষ্য কর এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
(৩) দৃশ্যকল্পের W চিহ্নিত অংশে অনুপস্থিত কোনটি?
(ক) কার্বন ডাইঅক্সাইড
(খ) অক্সিজেন
(গ) ক্লোরোফ্লোরো কার্বন
(ঘ) কার্বন মনোঅক্সাইড
উত্তর :
(খ) অক্সিজেন
(৪) চিত্রে প্রদর্শিত ঘটনাটি পৃথিবীতে সংঘটিত হলে—
(i) ওজোন স্তর নষ্ট হবে
(ii) অম্লবৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে
(iii) গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii
(খ) i ও iii
(গ) ii ও iii
(ঘ) i, ii ও iii
উত্তর :
(ঘ) i, ii ও iii
সৃজনশীল প্রশ্ন :
(১) (ক) এসিড বৃষ্টি কী?
উত্তর : বায়ু দূষণের একটি ক্ষতিকর প্রভাব হলো এসিড বৃষ্টি বা অম্লবৃষ্টি। বায়ুদূষণের ফলে বায়ুতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক গ্যাসীয় উপাদান মিশ্রিত হয় যেমন কার্বন মনোক্সাইড, এমোনিয়া, সালফার ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি। এই বিষাক্ত গ্যাসীয় পদার্থ গুলি বায়ুতে ভাসমান জলীয়বাষ্পের সাথে মিশ্রত হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায় যা পরে বৃষ্টি রূপে স্থলভূমিতে নেমে আসে একেই অম্লিক বৃষ্টি বা এসিড বৃষ্টি বলা হয়। এসিড বৃষ্টি প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। এসিড বৃষ্টি প্রকৃতির পরিস্রুত পানীয় জলকে পানীয়ের অযোগ্য করে তোলে। এই এসিড বৃষ্টি কৃষিকদের ফসলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে বাধাপ্রাপ্ত করে।
(খ) প্লাস্টিক মাটির জন্য ক্ষতিকর কেন? ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর : প্লাস্টিক মানুষের তৈরী একটি কৃত্তিম পদার্থ। এই পদার্থটি প্রাকৃতিক ভাবে মাটিতে ধ্বংস হয় না। আবার প্লাস্টিককে ধ্বংস করার জন্য আগুনে পোড়ালে এর থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়ে দূষণের সৃষ্টি করে। প্লাস্টিক বা পলিথিনকে মাটির নিচে চাপা দিলে এটি হাজার হাজার বছর ধরে একই অবস্থায় থাকবে। এর ফলে মাটির উর্বরতা কমে যাবে, মৃত্তিকার জলধারণ ও শোষণ ক্ষমতা হ্রাস পাবে। বর্তমানে প্লাস্টিকের প্রচুর ছোট ছোট কণা মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে ফলে উদ্ভিদ ও ফসলের বৃদ্ধি এবং উৎপাদনের হার কমে যাচ্ছে।
(গ) উদ্দীপকের প্রাণীগুলো কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে কারণসহ ব্যাখ্য কর।
উত্তর : উদ্দীপকের প্রাণীগুলো জলদূষণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। উদ্দীপকে দেওয়া চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে বিভিন্ন কলকারখানা থেকে নির্গত দূষিত বর্জ পদার্থ জলাশয়টিতে এসে পড়েছ। জাহাজ ও স্ট্রিমারের থেকে নির্গত বর্জ পদার্থ এবং জ্বালানি তেল জলে মিশছে। শহরের নোংরা আবর্জনাময় নালাও এসে মিশেছে এই জলাশয়ে। এর ফলস্বরূপ এখানে জলদূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে বিপদসীমার উপরে। ফলে এই জলাশয়ে বসবাসকারী সকল প্রাণী ও উদ্ভিদ সম্মুখীন হয়েছে বিষক্রিয়ার। এর ফলেই এখানকার মাছগুলি সব মরে ভেসে রয়েছে জলের উপর এর ফলে এই মৃত প্রাণী ও উদ্ভিদের পঁচতে থাকা দেহ থেকে বের হচ্ছে প্রচন্ড দুর্গন্ধ এবং প্রচুর পরিমানে মিথেন গ্যাস। যা এখানকার বায়ুকে করে তুলছে আরো বেশি দূষিত।
(ঘ) কী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে উদ্দীপকের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে?
উত্তর :
উদ্দীপকের এই দূষিত পরিবেশের ভারসাম্য পুনরায় ফিরিয়ে আন্তে হলে আমাদের কিছু অত্যাবশ্যক পদক্ষেপ অবলম্বন করতে হবে। যেমন সকল কলকারখানার থেকে নির্গত আবর্জনা ও বিষাক্ত জলকে প্রথমে পরিচ্ছন্ন করতে হবে তারপর নদীতে ফেলতে হবে। বা কলকারখানা নোংরা আবর্জনাকে এখানে না ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর শহরের নর্দমাকে সরাসরি নদীতে না নিয়ে কোনো আবর্জনা পরিশ্রুতকরন প্লান্টে স্থানান্তরিত করতে হবে। এরপরে উদ্দীপকের স্থানে প্রচুর পরিমানে বৃক্ষ রোপন করতে হবে। জলাশয়টিতে ব্যাপক আকারের পরিষ্কার কার্য চালাতে হবে যাতে যত নোংরা জমে আছে সেগুলোকে সেখান থেকে বের করে আন্তে হবে। যাতে জলের মধ্যে কোনো ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু জন্মাতে না পারে। জাহাজ বা স্টিমারের থেকে বর্জ পদার্থ ফেলা বন্ধ করার জন্য কঠিন আইন প্রণয়ন করতে হবে। এই সমস্ত কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে আমরা উদ্দীপকের পরিবেশটির ভারসাম্যকে রক্ষা করতে পারবো।
(২) (ক) দূষণ কী ?
উত্তর :
আমাদের পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশে মুখ্য কিছু উপাদান রয়েছে যেমন জল, বায়ু, মাটি, ইত্যাদি এই উপাদানগুলি জীবজগতের জন্য বিশেষ ভাবে জরুরি। জীবজগতের সকল প্রজাতির জীবনধারণের জন্য প্রকৃতির এই উপাদান গুলি অতি আবশ্যক কিন্তু অনেক সময় মানুষ্য সৃষ্ট কারণে বা প্রাকৃতিক কারণে এই উপাদানগুলিতে অন্নান্য বিভিন্ন পদার্থের মিশ্রণ ঘটে ফলে এই জীবনদায়ক উপাদানগুলিই জীবের ক্ষতি সাধন করে এবং ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পরে। এই ঘটনাকেই দূষণ বলা হয়।
(খ) পানি দূষণ কেন ক্ষতিকর?
উত্তর : দূষিত জল আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। যেমন – কলেরা, টাইফয়েড, আমাশা, ডায়রিয়া ইত্যাদি। জলদূষণের ফলে জলের মধ্যে বসবাসকারী জীব ও উদ্ভিদের স্বাভাবিক জীবনচক্র বাধা প্রাপ্ত হয়। দূষণের মাত্রা অতিরিক্ত হলে জলজ প্রাণীগুলি মারা যায়। জল দূষণের ফলে কৃত্তিম জলসঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরী হয়। কারণ দূষিত জল পানের অযোগ্য তাই জল থেকেও জল পাওয়া যায় না। জল দূষণের ফলে প্রকৃতির বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। কেননা পৃথিবীর জীবজগতের বাস্তুতন্ত্রে সকল প্রকার প্রাণী ও উদ্ভিদ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। জল দূষণের ফলে বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মানুষের মধ্যে জলবাহিত রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জল দূষণের ফলে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এই সকল কারণের জন্য জলদূষণ আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
(গ) পরিবেশের উপর ‘P’ কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরিবেশ দূষণের উপর P অর্থাত যানবাহনের থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোয়া বায়ুদূষণের সৃষ্টি করবে। এরফলে আমাদের পরিবেশের বায়ুতে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর পদার্থের মিশ্রণ ঘটবে এবং আমাদের বিভিন্ন রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে। যেমন শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগ, ইত্যাদি। বায়ু দূষণ যানবাহন থেকে নির্গত এই ধোয়ার জন্য আমাদের বায়ুমণ্ডলে কার্বনডাই অক্সাইডের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে যার দরুন আমাদের পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে পাহাড়ের বরফ গোলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি হচ্ছে এর ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা ডুবে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। যানবাহনের এই ধোঁয়াগুলি বায়ুর জলীয়বাষ্পের সাথে মিশে অম্লবৃষ্টি ঘটেছে যার ফলে জলদূষণ হচ্ছে এবং মৃত্তিকাতে অম্লের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টোরি হয়েছে খাদ্য সংকট। তাই বলা যায় পরিবেশের উপর P অর্থাৎ যানবাহন থেকে নির্গত দূষিত ধোয়া বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করবে।
(ঘ) উদ্দীপকের সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে আমাদের করণীয় কী তা যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : উদ্দীপকের সৃষ্ট সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন গাড়ির ধোঁয়া বের হবার জায়গায় দূষিত পদার্থ শোষণকারী ফিল্টার ব্যবহার করে। কম দূষণ সৃষ্টি করে এমন ইঞ্জিন বিশিষ্ট গাড়ি ব্যবহার করে। গাড়ির ইঞ্জিনের সঠিক সময়ে রক্ষনাবেক্ষন করিয়ে। রাস্তার রেড সিগনালে গাড়ি অকারণে চালিয়ে না রেখে একে বন্ধ করে দিলে পরিবেশে এই ক্ষতিকারক গ্যাস ও ধোয়াকে মেশার থেকে আমরা আটকাতে পারি। এবং এই সমস্ত উপায়ে আমরা বায়ু দূষণ আটকাতে পারি।
More Chapters Solutions :