NCTB Class 8 Science Bengali Version Chapter 9 বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ Solution
Bangladesh Board Class 8 Science Solution Chapter 9 বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ Solution Exercises Question and Answer by Experienced Teacher.এখানে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) কর্তৃক প্রকাশিত নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের নবম অধ্যায় বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ অনুশীলনের সমস্ত সমাধান দেওয়া হয়েছে।
NCTB Solution Class 8 Chapter 9 বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ :
Board | NCTB Bangladesh Board |
Class | 8 |
Subject | Science |
Chapter | Nine |
Chapter Name | বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ |
বর্তনী ও চলবিদ্যুৎ অনুশীলনী প্রশ্ন এবং উত্তর :
শূন্যস্থান পূরণ কর :
(১) দুটি ধাতব বস্তুর মধ্যে ___ থাকলে তড়িৎ ___ হয়।
(২) পরিবাহীর দুই প্রান্তের ___ কম থাকলে ___ মাত্রা কম হয়।
(৩) ইলেকট্রনিক কেটলির সাথে ___ ফিউজ লাগালে এটি ___ যাবে।
উত্তর :
(১) দুটি ধাতব বস্তুর মধ্যে পরিবাহী তার থাকলে তড়িৎ প্রবাহ হয়।
(২) পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব কম থাকলে তড়িৎ প্রবাহের মাত্রা কম হয়।
(৩) ইলেকট্রনিক কেটলির সাথে ৪ অ্যাম্পিয়ার ফিউজ লাগালে এটি গলে যাবে।
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন :
(১) ও‘মের সূত্রের ব্যাখ্যা দাও ।
উত্তর : বিশিষ্ঠ বিজ্ঞানী জর্জ সাইমন ও’ম বিদ্যুতের পরিবাহীর জন্য একটি সূত্র প্রণয়ন করেছিলেন যা ও’মের সূত্র নাম পরিচিত। তার মতে তাপমাত্রা স্থির থাকলে একটি নির্দিষ্ট পরিবাহীর মধ্যে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহের মান ওই পরিবাহীর উভয় প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমান হবে। অর্থাৎ কোনো বিদুৎ পরিবাহীর তাপমাত্রাকে যদি স্থির রাখা যায় (না বাড়বে, না কমবে) তাহলে ওই পরিবাহী দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎ প্রবাহের মান ওই পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক হবে। অর্থাৎ পরিবাহীর বিভব পার্থক্য বেশি থাকলে পরিবাহীতে বিদ্যুৎপ্রবাহও বৃদ্ধি পাবে, আবার পরিবাহীর বিভব পার্থক্য কম হলে পরিবাহীতে তড়িৎ প্রবাহও বৃদ্ধি পাবে।
(২) কোনো পরিবাহীর রোধের সাথে এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুৎ প্রবাহের সম্পর্ক কেমন ?
উত্তর : কোনো পরিবাহীর রোধের সাথে এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুতের প্রবাহের সম্পর্ক হবে ব্যাস্তানুপাতিক।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :
(১) বিদ্যুৎ প্রবাহের একক কী ?
(ক) কুলম্ব
(খ) অ্যাম্পিয়ার
(গ) ভোল্ট
(ঘ) ওম
উত্তর :
(খ) অ্যাম্পিয়ার
(২) পর্যায়বৃত্ত প্রবাহের উৎস কোনটি ?
(ক) ব্যাটারি
(খ) ডিসি জেনারেটর
(গ) জেনারেটর
(ঘ) বিদ্যুৎকোষ
উত্তর :
(গ) জেনারেটর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
হুমায়রা পড়ার ঘরে ২টি বাল্ব ও ১টি ফ্যানের সংযোগ দেওয়া আছে। অন্যদিকে তাদের খাবার ঘরে ২টি টিউবলাইট, ১টি ফ্যান ও ১টি ইলেকট্রিক কেটলির সংযোগ দেওয়া আছে।
(৩) হুমায়রার পড়ার ঘরে কত অ্যাম্পিয়ারের ফিউজ ব্যবহার করতে হবে?
(ক) ৫
(খ) ১০
(গ) ১৫
(ঘ) ৩০
উত্তর :
(ঘ) ৩০
(৪) হুমায়রাদের খাবার ঘরে ৫ অ্যাম্পিয়ারের ফিউজ ব্যবহার করলে-
(i) বিদ্যুৎ খরচ কম হবে
(ii) প্রায়ই বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটবে
(iii) সুইচ অন করা মাত্ৰ গলে যাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i ও ii
(খ) i ও iii
(গ) ii ও iii
(ঘ) i, ii ও iii
উত্তর :
(গ) ii ও iii
সৃজনশীল প্রশ্ন :
(১) হক সাহেব তার অফিসকক্ষে ৬০ ওয়াটের দুটি বাল্ব সিরিজে সংযুক্ত করলেন। কিন্তু ১টি ফ্যান ও ১টি টেলিভিশন প্যারালালে সংযুক্ত করেন।
(ক) বিদ্যুৎ প্রবাহ কী?
উত্তর : দুটি ভিন্ন বিভবের ধাতবকে পরিবাহী তার দিয়ে যুক্ত করে সেই তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুতের সঞ্চালন ঘটলে তাকে বিদ্যুৎ প্রবাহ বলে। আরো ভালো করে বললে, আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়েছে প্রত্যেক ধাতব পদার্থের মধ্যে অল্প পরিমানে ইলেক্ট্রন মুক্ত অবস্থায় থাকে। এই ইলেক্ট্রন গুলি মুক্ত বা স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে সক্ষম হয়। তাই যখন দুইটি আলাদা বিভবের ধাতব বস্তূকে কোনো পরিবাহীর মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যুক্ত করা হয় তখন ঋণাত্মক আধান যুক্ত ইলেক্ট্রন কণাগুলো উচ্চ বিভব ক্ষমতা সম্পন্ন ধাতব বস্তূর দিকে প্রবাহিত হয় একেই বিদ্যুৎ প্রবাহ বলে।
(খ) ৫ অ্যাম্পিয়ার ফিউজ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর : ৫ অ্যাম্পিয়ার ফিউজ বলতে বোঝানো হয় যে ফিউজের জন্য ব্যাবহৃত ওই তারটির মধ্যে দিয়ে ৫ অ্যাম্পিয়ারের বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে তারটি গলে যাবে এবং ঘরের বিদ্যুৎ প্রবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। কারণ ফিউজটি যেহেতু ৫ অ্যাম্পিয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন তাই এই ফিউজে ব্যাবহৃত তারটি ৫ অ্যাম্পিয়ারের থেকে বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে তারটি উত্তপ্ত হয়ে গলে যাবে।
(ঘ) বর্তনী দুটির মধ্যে কোনটি বেশি সুবিধাজনক তুলনামূলক আলোচনা করে মতামত দাও ।
উত্তর : এখানে দুটি বর্তনীর ব্যবহার দেখানো হয়েছে একটি শ্রেণী সংযোগ বর্তনী এবং অপরটি সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী। এই দুটি বর্তনীর কার্যপ্রণালী পৃথক হয়ে থাকে এবং এই দুটি বর্তনীর মধ্যে কিছু পার্থক্যও পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে শ্রেণী সংযোগ বর্তনী ও সমান্তরাল সংযোগ বর্তনীর মধ্যেকার পার্থক্য আলোচনা করা হলো –
(১) শ্রেণী সংযোগ বর্তনী :
(ক) যে বর্তনীতে রোধ, তড়িৎদ্বার বা উপকরণ সমূহকে প্রথমটির এক প্রান্ত থেকে দ্বিতীয়টির অন্য প্রান্তে এবং দ্বিতীয়টির অপর প্রান্তের সাথে তৃতীয়টির এক প্রান্ত যুক্ত করা হয়, এই ভাবে পর্যায় ক্রমিক ভাবে সাজানো বর্তনীকে শ্রেণী সংযোগ বর্তনী বলা হয়।
(খ) এই বর্তনীর মধ্যে দিয়ে একই ক্ষমতা সম্পন্ন তড়িৎ প্রবাহিত হয় ফলে এই বর্তনীর সকল উপকরণের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহের ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
(গ) এই বর্তনীর মধ্যে একটি বাল্ব জ্বালালে যে পরিমান উজ্জ্বল হবে, আরেকটি বাল্ব এই বর্তনীতে যুক্ত করলে প্রথম বাল্বটির উজ্বলতা হ্রাস পাবে।
(ঘ) এই বর্তনীর কোনো একটি বিদ্যুৎ উপকরণ খারাব হলে এই বর্তনীর বাকি সব উপকরণও কাজ করবে না।
(ঙ) এই বর্তনীতে বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিমাপ করার জন্য অ্যামিটার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
(২) সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী :
(ক) যে বর্তনীতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম গুলির প্রান্তগুলি দুই বা অধিক রোধের সঙ্গে যুক্ত করা হয় এবং সব গুলি সরঞ্জামের একটি প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তটি অন্য একটি সাধারণ বিদ্যুতে সংযুক্ত থাকে। এই প্রকার বর্তনীকে সমান্তরাল সংযোগ বর্তনী বলে।
(খ) এই বর্তনীর সকল বিন্দুতে ভিন্ন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। তাই এই প্রকারের বর্তনীতে সকল সরঞ্জাম সমান পরিমানে বিদ্যুৎ প্রবাহ পেয়ে থাকে।
(গ) এই বর্তনীতে একটি প্রান্ত বা বিন্দু খারাব হলেও অন্য প্রান্তে বা বিন্দুতে তড়িৎ প্রবাহ বর্তমান থাকে।
(ঘ) এই বর্তনীতে বিদ্যুতের প্রবাহ পরিমাপের জন্য ভোল্টামিটার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
(২) কাফি সাহেবের বাসার বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ইদানীং প্রায়ই ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেমন- সুইচ অন করার সময় শক লাগা, বাল্ব ফিউজ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এমতাবস্থায় ইলেকট্রিশিয়ান ডাকা হলে তিনি দুটি যন্ত্রের সাহায্যে বিদ্যুৎপ্রবাহ ও ভোল্টেজ পরীক্ষা করে কিছু ত্রুটি লক্ষ করলেন । তিনি বিদ্যুতের কার্যকর ব্যবহারে পরিবারের সদস্যদের আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিলেন।
(ক) রোধ কী?
উত্তর : কোনো পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে সেই পরিবাহী তারের অনু-পরমাণু প্রবাহিত হয় বিদ্যুতের ইলেক্ট্রন কণাগুলোকে বাধা দেয় ফলে বিদ্যুতের প্রবাহের গতি হ্রাস পায় এই বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনাকেই রোধ বলে। বিদ্যুৎ প্রবাহের সময় ঋনাত্বক আধান যুক্ত ইলেক্ট্রন কণাগুলি কম বিভব প্রান্ত থেকে বেশি বিভব প্রান্তের দিকে প্রবাহিত হয়। ইলেক্ট্রন কণাগুলি যে পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয় সেই পরিবাহীর মধ্যেকার অনু ও পরমাণুর সাথে প্রবাহিত ইলেক্ট্রন কণাগুলি সংঘর্ষ হয় এর ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। পরিবাহী তারের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহের সময় পরিবাহী তারের অণু-পরমাণুর মধ্যে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিদ্যুত প্রবাহের গতি হ্রাস পায়। পরিবাহীর এই বাধা দানের ধর্মকেই রোধ বলে।
(খ) ১০ কিলোও‘ম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো পরিবাহীর রোধ ১০ কিলো ও’ম হলে ওই পরিবাহীর দুই প্রান্তের মধ্যে বিভব পার্থক্য হবে ১০ কিলোভোল্ট এবং এই পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে পরিবাহিত তড়িৎ প্রবাহ হবে ১ অ্যাম্পিয়ার।
(ঘ) বিদ্যুতের কার্যকর ব্যবহারে কাফি সাহেবের পরিবার সচেতন হলে ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে এর কীরূপ প্রভাব পড়বে? বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : বিদ্যুতের কার্যকর ব্যাবহারে কাফি সাহেবের পরিবার সচেতন হলে তাদের ব্যাক্তি জীবনের সাথে সাথে জাতীয় জীবনেও এর প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।
কাফিসাহেবের ব্যাক্তিজীবনের প্রভাব :
বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করলে কাফি সাহেবের বাড়ির সদস্যদের দ্বারা চালিত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি গুলি খারাব হয় থেকে রক্ষা পাবে। কাফি সাহেবের বাড়িতে ঘন ঘন বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হছিলো এর থেকে জ্ঞাত হয় যে তারা তাদের ফিউজের কার্যকরী ক্ষমতার থেকে বেশি পরিমান বিদ্যুৎ ব্যবহার করছিলেন। অকারণে ঘরের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চালানোর জন্য তাদের মধ্যে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের শক লাগছিলো। আবার বিদ্যুতের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে তাদের বাড়িতে খরচও বৃদ্ধি হয়েছে। তাই কাফি সাহেবের বাড়ির সকল সদস্য যদি বিদ্যুৎ ব্যাবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করেন তাহলে তারা এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং অর্থনৈতিক দিক থেকেও তাদের সাশ্রয় হবে।
জাতীয় জীবনে এর প্রভাব :
বাংলাদেশে আজ কাফি সাহেবের মতো একাধিক পরিবার একই ভাবে বিদ্যুতের অপচয় সাধন করছে। এর ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। বিদ্যুতের এই অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করার জন্য বাড়াতে হচ্ছে বিদুৎতের উৎপাদন। বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সম্পদ। এছাড়া অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হচ্ছে কয়লা সহ বিভিন্ন উপাদান। এর ফলে দিনকে দিন বেড়েই চলেছে বিদ্যুতের দাম এর সঙ্গে সঙ্গে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে দেশের জাতীয় অর্থনীতির উপর।