NCTB Class 8 BGS Chapter 3 বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন Solution/Guide

NCTB Class 8 BGS Chapter 3 বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন Solution/Guide

Bangladesh Board Class 8 Solution for বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়. Chapter 3 বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন. Solution for Exercises Question and Answer by Experienced Teacher.এখানে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) কর্তৃক প্রকাশিত অষ্টম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের তৃতীয় অধ্যায় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন অনুশীলনের সমস্ত সমাধান দেওয়া হয়েছে।

NCTB Solution Class 8 Chapter 3 বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন :

Board NCTB Bangladesh Board
Class 8
Subject BGS
Chapter তৃতীয় 
Chapter Name বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন অনুশীলনী প্রশ্ন এবং উত্তর :

NCTB Class 8 BGS Chapter 3 বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন Solution/Guide

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :

(১) পূর্বের যানবাহন গরুর গাড়ির পরিবর্তে বর্তমানে মোটর গাড়ির ব্যবহার এটিকে বলে-

(ক) সামাজিক পরিবর্তন

(খ) সাংস্কৃতায়ন

(গ) সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ

(ঘ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন

উত্তর :

(ক) সামাজিক পরিবর্তন

(২) বাঙালিরা ইংরেজ শাসকের অধীনে থাকায় অনেক ইংরেজি শব্দ বাংলায় মিশে আছে এটিকে কী বলে?

(ক) সাংস্কৃতিক আদর্শ

(খ) সাংস্কৃতিক ব্যাপ্তি

(গ) সাংস্কৃতায়ন

(ঘ) সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ

উত্তর :

(ঘ)সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ

(৩) বাঙালি পুরুষেরা পহেলা বৈশাখে পাঞ্জাবি ও মেয়েরা শাড়ি পরে। এটাকে কী বলে?

(ক) সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ

(খ) সাংস্কৃতিক আদর্শ

(গ) সাংস্কৃতিক ব্যাপ্তি

(ঘ) সাংস্কৃতায়ন

উত্তর :

(খ) সাংস্কৃতিক আদর্শ

(8) নিচের কোনটি শিক্ষার সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ফল?

(ক) শ্রেণিকক্ষে স্পিকার ব্যবহার

(খ) শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দলগত কাজ করা

(গ) শিক্ষার্থীর বাড়ির কাজ প্রদর্শন

(ঘ) শিক্ষার্থীর মুখস্থ পড়া

উত্তর :

(ক) শ্রেণিকক্ষে স্পিকার ব্যবহার

(৫) কীর্তন গান রচনায় মুসলমান কবিগণও অংশগ্রহণ করেছিলেন। কেননা সুলতানি আমলে

(i) হিন্দু মুসলমানদের সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ

(ii) শ্রীচৈতন্যের বৈষ্ণব ভাবধারার প্রভাব ছিল ব্যাপক

(iii) এটিই বাঙালির প্রথম সাহিত্য কর্ম ছিল

নিচের কোনটি সঠিক ?

(ক) i

(খ) i ii

(গ) ii iii

(ঘ) i, ii iii

উত্তর :

(খ) i ও ii

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬ ও ৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :

মনু মাঝি নৌকা বাইছে। নতুন ধানে ভরা তার নৌকা। মনের সুখে গলা ছেড়ে গাইছে বাংলার চির পরিচিত একটি গান।

মন মাঝি তোর বৈঠা নেরে আমি আর বাইতে পারলাম না।

(৬) মনু মাঝি কোন ধরনের গান গাইছেন ?

(ক) মুর্শিদি

(খ) ভাওয়াইয়া

(গ) বারমাস্যা

(ঘ) বাউল

উত্তর :

(খ) ভাওয়াইয়া

(৭) মনু মাঝির গানের মধ্যে কোনটি বেশি প্রকাশ পেয়েছে ?

(ক) আধ্যাত্মিক সাধনা

(খ) নৈসর্গিক অবস্থা

(গ) নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য

(ঘ) সাহিত্য শিল্পের চর্চা

উত্তর :

(ঘ) সাহিত্য শিল্পের চর্চা

সৃজনশীল :

(১) আজমল সাহেব ০৫ বছর পর কাতার থেকে দেশে ফিরে তার ছেলে- মেয়েদের পরিবর্তন দেখে বিস্মিত হলেন। তার মেয়ে ইন্টারনেট থেকে ঘরে বসেই নতুন নতুন তথ্য ও দেশ- বিদেশের খবর জানছে। ছেলে ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সংগ্রহ করছে। তার ছোট ভাই বিদেশ থেকে অনলাইনে টাকা পাঠাচ্ছে। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের জীবনযাপনেও পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।

(ক) সামাজিক উন্নয়ন কী?

উত্তর : সময়ের সাথে সাথে কোনো দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে সেখাকার সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সংগঠিত হলে তাকে সামাজিক উন্নয়ন বলে। স্পষ্টকরে বললে কোনো দেশের সামাজিক উন্নয়ন বলতে সেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে সেই দেশের মানুষের জীবনযাত্রার সার্বিকউন্নয়নকে বোঝায়। কোনো দেশের অর্থনীতির উন্নতির সাথে তাল মিলিয়ে যদি সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি না হয় তাহলে সেই দেশকে সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে বলা যাবে না। সামাজিক উন্নয়ন শুধু দেশের অর্থনীতিকেই নির্দেশ করে না নির্দেশ করে দেশের দেশের মানুষের আয়, সংস্কৃতির বিকাশ, জীবন যাত্রার উন্নতি ইত্যাদিকে।

(খ) অন্য সংস্কৃতি ধারা নিজ সংস্কৃতিতে আয়ত্ত করাকে কী বলে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : অন্য সংস্কৃতি ধারা নিজ সংস্কৃতিতে আয়ত্ব করাকে সংস্কৃতির আত্তীকরণ বলে। এটি এমন একটি পক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায় অন্য একটি ভিন্ন সংস্কৃতিকে আয়ত্ব করে। সমাজের সংস্কৃতির বিকাশ বজায়  রাখার জন্য সংস্কৃতির আত্তীকরণ একটি গুরুপ্তপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধনের ফলেই সমাজের সংস্কৃতির বিকাশ লাভ করতে পারে। সামাজিক আত্তীকরণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন – এক সংস্কৃতির মানুষ অন্য সংস্কৃতির মানুষের সাথে বসবাস শুরু করলে অথবা দুটো একবারের ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হলে। এই ভাবে বিভিন্ন কারণে সমাজে বিভিন্ন সঙ্গস্কৃতির পরস্পরের মধ্যে আত্তীকরণ সম্ভব হয় এবং মানুষের মধ্যে সংস্কৃতির অগ্রগতির ধারা অক্ষুন্ন থাকে।

(গ) আজমল সাহেবের পরিবারে কী ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : আজমল সাহেব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন লক্ষ করছেন। বর্তমান সময়ের আধুনিক প্রযুক্তি সমগ্র বিশ্বের সংস্কৃতিকে এক ব্যাপক ব্যাপ্তি প্রদান করেছে। বিশ্বের যে কোন সংস্কৃতির মানুষ এখন ঘরে বসেই বিশ্বের অন্য এক প্রান্তের ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সাথে সম্পর্ক ও যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছে। প্রযুক্তির আধুনিকরণের জন্য বর্তমানে প্রায় সকল   সংস্কৃতি ব্যাপক ভাবে সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। অনলাইনে টাকা পাঠানো, ফেসবুকে কথা বলা, নতুন বন্ধু বানানো, ইন্টারনেটে কোনো কিছুর তথ্য সংগ্রহ করা, নতুন ভাষা শেখা, এই সবই প্রযুক্তির দেন। আধুনিক প্রযুক্তি বর্তমানে সমগ্র পৃথিবীকেই একটি বৃহৎ সংস্কৃতিতে পরিণত করেছে। আজমল সাহেব দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বাড়ি ফিরে সংস্কৃতির এই পরিবর্তনকেই দেখতে পেয়েছেন।

(ঘ) উদ্দীপকের বৈচিত্র্যগুলো সমাজ পরিবর্তনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে-এর স্বপক্ষে তোমার যুক্তি দাও ।

উত্তর : উদ্দীপকের বৈচিত্রগুলো সমাজ পরিবতনের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। সমাজের উন্নয়নের ফলে মানুষের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। প্রযুক্তির আধুনিকরণের জন্য মানুষ অনেক বেশি উন্নত ও স্বচ্ছল হতে পেরেছে। ঘরে বসে বিভিন্ন দেশ-বিদেশ থেকে পড়াশোনা করা, ডিজিটাল মাধ্যমে টাকার লেনদেন করা, কম্পিউটারের ব্যবহার করা, অনলাইনে একদেশ থেকে অন্যদেশে কথা বলা, ইন্টারনেটে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা এমনকি নিজের ভাষা ছাড়াও অন্যদেশের ভাষা শেখা ইত্যাদি সমাজ পরিবর্তনে আধুনিক প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাব। প্রযুক্তির আধুনিকরণের জন্যই বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সমাজে মানুষের মধ্যে চিন্তাধারার পরিবর্তন এসেছে, অনেক কুসংস্কারের অবসান ঘটেছে। সমাজের মানুষের মধ্যে ভিন্ন সংস্কৃতির বৈশিষ্টকে নিজের সংস্কৃতির সাথে সংযোজন ঘটানোর হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রযুক্তির আধুনিকরণের জন্যই বর্তমানে সমাজের বিভিন্ন পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।

(২) (ক) চর্যাপদের কাল নির্ণয় করেন কে?

উত্তর : চর্যাপদের কাল নির্ণয় করেছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। বাংলার প্রথম সাহিত্যকর্মের নাম চর্যাপদ। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবার থেকে বাংলার এই  সাহিত্যকে উদ্ধার করেন। লুইপা এবং কাহুপা ছিলেন এই চর্যাপদের বিশিষ্ট দুইজন লেখক। এই সাহিত্যগুলি অতি প্রাচীন বাংলা অক্ষরের লেখা হয়েছে। এই লেখার সঠিক অর্থ ও ভাব বোঝা বর্তমানে বেশ কঠিন ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

(খ) সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ কেন ঘটে?

উত্তর : যখন দুটি ভিন্ন সমাজের বা সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে মেল্ বন্ধন ঘটে এবং উভয় সংস্কৃতির মানুষ  পরস্পরের সংস্কৃতিকে আতত্ত্ব করে তখন সংস্কৃতির আত্তীকরণ ঘটে। এই প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন কারণে সংগঠিত হতে পারে। যেমন – দুটি ভিন্ন সংষ্কৃতির মানুষের মধ্যে বিবাহ সম্পর্ক স্থাপন হলে, কর্মসূত্রে নিজের সংস্কৃতির থেকে দূরে অন্য সং স্কৃতিতে বাস করলে, অর্থ উপার্জনের জন্য দীর্ঘদিন অন্য দেশে বসবাস করলে সমাজে সংস্কৃতির আত্তীকরণ সংগঠিত হয়। এর ফলে অনেক সময় মানুষের মধ্যে মিশ্র সংস্কৃতির ছাপ লক্ষ করা যায়। আবার এর ফলে দুটি সংস্কৃতিই  বিকাশ লাভ করতে পারে এবং অনেক সময় এর ফলে বিভিন্ন সংস্কৃতির আলাদা আলাদা কুসংস্কার বা ধর্মীয় গোড়ামির অবসান ঘটে। এই কারণে সমাজের বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন বা আত্তীকরণ সামাজিক উন্নতিতে সাহার্য্য করে এবং মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় উন্নতির পথে।

(গ) উদ্দীপকে বর্ণিত শিল্পটির ধরন ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : উদ্দীপকের বর্ণিত ‘ক’ শিল্পটির দৃশ্যশিল্পের উদাহরণ। পোড়ামাটির শিল্প, তালপাতার শিল্প, নকশিকাঁথা, এবং কষ্টিপাথরের শিল্প এই সবই বস্তূসংস্কৃতির উদাহরণ। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা এই দৃশ্যশিল্পের জন্য সুনাম অর্জন করেছিল। গ্রামের মানুষ তাদের প্রতিভার পরিচয় দিয়ে আসছে সেই সুদূর অতীত থেকেই। বাঙালির সুনির্মিত বাঁশের দোচালা ঘর, বাঁশের কাঠামো দিয়ে তৈরী ঘরের চালওয়ালা ঘর বাংলার নিদর্শন। বাংলার  এই দৃশ্যশিল্পের সব থেকে বড়ো উদাহরণ হলো পোড়ামাটির শিল্প। মাটির পাত তৈরী করে তাতে দৃশ্য অঙ্কন করে তা আগুনের তাপ ব্যবহার করে স্থায়ীরূপ দেওয়া ছিল এই শিল্পের বৈশিষ্ট। এছাড়া পাল রাজাদের সময়কালে  বাংলার তালপাতায় রঙের ব্যবহার করে অঙ্কিত চিত্র বিশেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আবার বাংলার তাঁত শিল্প সমগ্র বিশ্বে বিশেষ ভাবে সমাদৃত হয়েছে। বাংলায় তৈরী মসলিন কাপড়ের সুনাম বিশ্ব ব্যাপী প্রসিদ্ধ। আবার বাংলার গ্রাম্য নারীদের কাথায় সুই সুতো দিয়ে করা বিভিন্ন নকশা বা চিত্র কল্প বিশেষ ভাবে পরিচিতি লাভ করেছে। গ্রামের মহিলারা সেলাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন গল্পকে কাপড়ের মধ্যে চিত্রায়িত করতো যা নকশিকাঁথা নামে পরিচিত। এখনো  গ্রামবাংলায় এই শিল্পের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

(ঘ) বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশে শিল্পটির গুরুত্ব অপরিসীম”-বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : বাঙালির সংস্কৃতির বিকাশের পেছনে বাংলা সাহিত্যের গুরুপ্ত ও প্রভাব অপরিসীম। বাংলা সাহিত্য শুধু বাংলার সংইস্কৃতিকে সমৃদ্ধই করেনি, বিশ্বের সাহিত্য সংস্কৃতির মঞ্চে এক বিশেষ স্থান দখল করতেও সাহার্য্য করেছে। বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন হলো চর্যাপদ। বাংলার সাহিত্য এর মধ্যে লুকিয়ে আছে বাংলা সংস্কৃতির অপরূপ সৌন্দর্যতা এবং বৈচিত্রতা। বাংলা সংষ্কৃতিকে বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে বাংলা সাহিত্য। মঙ্গোলকাব্য, পুঁথিসাহিত্য, গদ্যসাহিত্য, চর্যাগীতি, কীর্তনগান ইত্যাদি বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্য বহন করছে। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিভূতিভূষণ, সুকুমার রায়, কাজী নজরুল ইসলাম ইত্যাদি প্রমুখ ব্যক্তি তাদের সাহিত্যের মাধ্যমে বাংলার সংস্কৃতিকে বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করতে সাহার্য্য করেছে। তাদের অভাবনীয় লেখনের মধ্যদিয়ে বাংলার সংস্কৃতি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের প্রত্যেক মানুষের মনের গভীরে। কেননা বাংলার সাহিত্য তৈরী হয়েছে বাংলাকে ঘিরে, বাংলার মানুষের জীবনকে নিয়ে, বাংলার ঐতিহ্যবাহী এবং বৈচিত্রপূর্ণ কসংস্কৃতিকে নিয়ে। এই কারণে বাংলার সাংস্কৃতির শুধু বিকাশেই নয় বাংলার সংস্কৃতিকে বিশ্বের মধ্যে এক অনন্য সংস্কৃতি হিসেবে পরিচিত করতে বাংলা সাহিত্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

(৩) (ক) টেরাকোটা কী ?

উত্তর : বাংলা সংস্কৃতির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট বা নিদর্শন বলা যেতে পারে টেরাকোটাকে। আমাদের বাংলার শিল্পীরা মাটির পাত তৈরী করে তাতে বিভিন্ন ছিল চিত্র অঙ্কন করতো এবং আগুনের তাপে পুড়িয়ে সেই সকল অঙ্কিত চিত্রকে স্থায়ী রূপ দিতো। মাটির তৈরী পাতর এই চিত্রগুলোকেই টেরাকোটা বা পোড়ামাটির শিল্প বলে। বাংলার মানুষ তাদের সেই সময়ের সামাজিক পটভূমি এই সব  চিত্রের মধ্যে তুলে ধরতো।

(খ) পাল যুগে তালপাতায় আঁকা ছবিগুলো এখনও ঝকঝকে রয়েছে কেন ?

উত্তর : বাংলা সংস্কৃতির দৃশ্যশিল্পের এক বিশেষ নিদর্শন হলো পাল যুগের এই তালপাতায় আঁকা চিত্রপটের। তাল গাছের পাতাকে বিশেষ ভাবে তৈরী করে তাতে দেশীয় পদ্ধতিতে বানানো রঙের ব্যবহার করে চিত্র অঙ্কন করা হতো। এই কারণে হাজার হাজার বছর পার হয়ে গেলেও তালপাতার করা এই ছবি গুলি বর্তমান সময়েও একদম স্পষ্ট বা চকচকে অবস্থায় আছে। এর থেকে বাঙালি শিল্পীদের উৎকৃষ্ট কারিগরি বিদ্যার পরিচয় পাওয়া যায়। পাল যুগে বাংলার বৌদ্ধধর্মের বিভিন্ন চিত্র শিল্পের ও লিখিত পুঁথি এই তাল পাতাতে লেখা ও আঁকা হয়েছে। পাল যুগের এই শিল্পকলা থেকে বাংলার সংস্কৃতিতে বোধ ধর্মের প্রভাব ও বিস্তার সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান পাওয়া যায়।

(গ) উদ্দীপকে বাংলার কোন শিল্পের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? বর্ণনা করো।

উত্তর : উদ্দীপকে বাংলার বস্তূগত শিল্প বা দৃশ্যশিল্পের বৈশিষ্ট স্পষ্ট হয়েছে। বাংলার মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই শিল্পকলাতে অত্যন্ত দক্ষ ও প্রতিভাশালী ছিল। গ্রাম্য বংলায় মানুষ বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরী করতো। বাংলার গ্রামের মানুষ বাঁশ দিয়ে একচালা থেকে শুরু করে আটচালা পর্যন্ত ঘর তৈরী করেছে, বাঁশের ঝুড়ি, ডালি, এবং অন্যান্য বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরী করেছে উদ্দীপকে আমরা তারই চিত্র দেখতে পেয়েছি। আবার বাংলার গ্রামের মহিলারা কাপড়ের মধ্যে সুতো দিয়ে তৈরী করেছে বিভিন্ন চিত্রপট, কারুকার্য সম্পন্ন বস্ত্র। এর থেকে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতিতে মহিলাদের অবস্থান ও গুরুপ্তর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। গ্রাম্য নারীদের কাপড়ের এই কাজকে নকশিকাঁথা বলা হয়। প্রাচীন সময় থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলার এই দৃশ্যশিল্পকে সমৃদ্ধ করে আসছে বাংলার নারীদের প্রতিভা। বাংলা শিল্পের এক মুখ্য ও প্রধান রূপ হলো এই বস্তূশিল্প। বাংলার মানুষ মৃৎশিল্প, চিত্রশিল্প, বস্ত্রশিল্প ইত্যাদিতে সমগ্র বিশ্বে খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেছিলেন। তাই উদ্দীপকের প্রত্যেকটি জিনিস থেকে আমরা বাংলার সংস্কৃতির বস্তূশিল্পের বৈশিষ্ট খুঁজে পাই।

(ঘ) উদ্দীপকের শিল্পকর্ম এখনও টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান মূল্যায়ন করো।

উত্তর : বাংলার শিল্পে নারীদের ভূমিকা সেই প্রাচীকাল থেকেই স্পষ্ট। বাংলার চিত্রশিল্প, কারুকার্য শিল্প, বস্ত্রশিল্প, এবং সর্বোপরি নকশিকাঁথা শিল্পে বাংলার নারীরা এক বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। বাংলার বস্তূশিল্পে নারীরা বিশেষ কারিগরি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। কাপড়ের মধ্যে তৈরী বিভিন্ন মাঙ্গলিক কাব্যের দৃশ্যপটকে চ চিত্রায়িত করেছে বাংলার নারীরা তাদের সুই সুতার কাজের মধ্যে দিয়ে। এই ভাবে বাংলার শিল্পকর্মের প্রধান অঙ্গ হয়ে উঠেছে বাংলার এই প্রতিভাবান নারীরা। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত বাংলার এই শিল্পকলাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে বাংলার নারীরা। আজ বাংলার বিভিন্ন গ্রামে বাঁশের ঝুড়ি, ডালি, বাস্কেট, পাটের তৈরী ব্যাগ, অপূর্ব সুন্দর নকশিকাঁথা তৈরী করে চলেছে আমাদের বাংলার এই প্রতিভাবান নারীরা। তাই গ্রামবাংলার এই শিল্পকর্মকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাংলার নারীদের অবদান অভাবনীয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *